ক্রিকেট ক্যারিয়ারে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়তে পেরেছে এমন কয়জনই বা ব্যাটার আছে ক্রিকেট বিশ্বে? প্রত্যেক ব্যাটারকে তো একদিন না একদিন কোন না কোন বোলারের হাতে দিতে হয় ধরা। তবে বিশ্বক্রিকেটে ফিল হিউসের গল্পটা তাদের চেয়ে অন্যরকম। সে যে এখনো আছে নট আউট। তাকে বা আউট করবে কে? সে যে চিরতরে থাকবে নট আউট!
ফিল হিউস। পুরো নাম ফিলিপ জোয়েল হিউস। যেদিন নিজের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচটি খেলতে নেমেছিলেন মাঠে সেইদিন তিনি কি ভেবেছিলেন! হয়তো নিজের ক্রিকেট ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচটা খেলার জন্য শেষবারের মতো ব্যাট হাতে মাঠে নামতে চলেছেন তিনি? তবে হ্যাঁ নিয়তির নির্মম পরিহাসের কারণে সেদিনটা হয়ে গিয়েছিলো ক্রিকেট ইতিহাসের কালোদিন হিউসের শেষদিন।
সময়টা আজ থেকে বছর ৭ আগের। ২০১৪ সালের ২৫শে নভেম্বর অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস এবং দক্ষিণ আস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার একটি ম্যাচে সেদিন ব্যাট হাতে মাঠে নেমেছিলেন ফিল হিউস। দারুণ ব্যাট করে ম্যাচের পুরোটা আলো নিজের দিকে ও নিয়ে এসেছিলেন এই ব্যাটার। তবে এতো আলোর মাঝেও হঠাৎ থমকে গিয়েছিলো পুরো ক্রিকেট বিশ্ব শন অব্যাটের করা এক বাউন্সার মাথায় লাগার পর সাথেই সাথেই মাঠে লুটিয়ে পড়েন হিউস। সঙ্গে সঙ্গে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে এর দুইদিন পর ২৭শে নভেম্বর (আজকের দিনে) মৃত্যুর কাছে হার মেনে নিয়ে এই নশ্বর পৃথিবী নামক গ্রহ থেকে চিরতরে বিদায় নিতে হয় তাকে।
তাইতো ক্রিকেট প্রেমীদের কাছে ফিলিপ হিউজ একজন নট আউট ক্রিকেটারের গল্প। যাকে আর কোন ভাবে আউট করতে পারবেনা কোন বোলার। সেই বোলার যত বাউন্সার আর ইয়র্কার দিক না কেন তিনি যে নটআউট থাকবে চিরন্তর। কারণ ব্যাট হাতে যে আর বাইশ গজে নামা হচ্ছেনা তার। ৬৩ রান করে চিরদিনই নটআউট থাকবে সকল ক্রিকেট প্রেমীদের অন্তরে।
১৯৮৮ সালের ৩০ শে নভেম্বর নিউ সাউথ অস্ট্রেলিয়ার ম্যাকসভিলে শহরে জন্মগ্রহণ করেন এই উইকেটকিপার এবং উদ্বোধনী ব্যাটার। খেলোয়াড়ী জীবনে ডানহাতি ব্যাট করতে থাকা এই প্রতিভাবান ক্রিকেটার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত খেলেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার জার্সি গায়ে ২৬টি টেস্ট। যেখানে ৩২.৬৫ গড়ে ৩টি শতক এবং ৭টি অর্ধশতকে রান করেছিলেন ১৫৩৫। ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসটি ছিলো ১৬০ রানের। অন্যদিকে ২৫টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে ৩৫.৯১ গড়ে ২ শতক এবং ৪ অর্ধশতকে রান করেছিলেন ৮২৫। ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ ইনিংসটি ছিলো অপরাজিত ১৩৮ রানের। তাছাড়া প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে রয়েছে ৯ হাজারের অধিক রান। খেলেছিলেন সিডনি থান্ডারের মতো বিগ ব্যাশ লিগে যেখানে হিউসের সতীর্থ হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশী অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।
তবে এতো কিছুর পরেও ২০১৪ সালে সিডনির একটি হাসপাতালে নিজের শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন হিউস। বেঁচে থেকো সকলের অন্তরে ভালো থেকো ফিলিপ হিউস