মরুর বুকে বিশ্বকাপ উন্মাদনা শেষ হয়েছে গতকাল রাতেই। যেখানে প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠা নিউজিল্যান্ডকে ৮ উইকেটে হারিয়ে প্রথম বিশ্বকাপ শিরোপা নিজেদের ঘরে তুললো অস্ট্রেলিয়া। তবে শুরু থেকে শেষ বিশ্বকাপের রেশটা ছিলো বেশ ছিলো অনেক ঘটনা রটেছে অনেক রটনা। একঝলকে দেখা নেওয়া যাক বিশ্বকাপের কিছু জানা অজানা ঘটনা সম্পর্কে যা স্বাক্ষী হয়ে থাকবে ক্রিকেটবোদ্ধাদের অন্তরে।
বাংলাদেশের বিপক্ষে স্কটল্যান্ডের জয়ঃ ক্রিকেট যদি হয় অঘটনের খেলা তবে সেই অঘটনের শুরুটা হয়েছিলো বিশ্বকাপের প্রথমদিন থেকেই। বিশ্বকাপের বিশ্বঞ্চে মাঠের লড়াইয়ের আগে আয়ারল্যান্ড এবং শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই প্রস্তুতি ম্যাচ হারের পর মূলপর্বে এসে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে অঘটনের শিকার মাহমুদউল্লাহর বাংলাদেশ হেরেছিলো ৬ রানের ব্যবধানে।
ক্যাম্পারের চার বলে চারঃ বিশ্বকাপের বিশ্বমঞ্চে প্রথমবারের মতো খেলতে এসে নতুন এক রেকর্ডে নাম লিখিয়ে নিলেন আইরিশ পেসার কার্টিস ক্যাম্পার। বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে টানা চার বলে চার উইকেট নিয়ে বিশ্বকাপে প্রথম বোলার হিসেবে ডাবল হ্যাটট্রিক করলেন তিনি। তাছাড়া আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তৃতীয় বোলার হিসেবে এই রেকর্ড গড়েন তিনি।
প্রথমে প্রথমঃ যদি শুরু থেকে কিছু হয় ভালো তবে সেই শুরুই আশার আলো। এই বাক্যকে প্রাধান্য দিয়ে নামিবিয়া পেয়েছে সাফল্য। বিশ্বকাপের বিশ্বমঞ্চে প্রথমবারের মতো খেলতে এসে ওরা লিখিয়ে নিলো দারুণ এক অর্জনে। গ্রুপের দুই শক্তিশালী প্রতিপক্ষ আয়ারল্যান্ড এবং নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে বিশ্বকাপের প্রথম আসরে সুপার টুয়েলভ নিশ্চিত করেছিলো তারা।
বাটলারের সেঞ্চুরিঃ প্রথম অর্ধশতকে করতে খেলে নিয়েছিলো ৪৫টি বল পরের অর্ধশতকে কেবল ২২ বল। চাপকে জয় করার মূলমন্ত্র হয়তো বাটলারের থেকে কেই বা ভালো জানতো। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দলের চাপের মুহূর্তে নিজের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে প্রথম তো বটে করেছিলেন সদ্য সমাপ্ত হওয়া বিশ্বকাপের একমাত্র সেঞ্চুরি টাও।
দুই চ্যাম্পিয়নের বিদায়ঃ বিশ্বকাপের বিশ্বমঞ্চ থেকে বিদায় নিয়েছিলেন দুই ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ডোয়াইন ব্রাভো এবং ক্রিস গেইল। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে ডোয়াইন ব্রাভো অবসর নিয়ে নিলেও গেইল বলেছিলেন বিশ্বকাপে আর দেখা যাবে না তাকে।
রিজওয়ানের দেশপ্রেমঃ দেশের জন্য নিজের জীবনকে বাজি রাখা যদি হয় দেশপ্রেম তবে সেই দেশপ্রেমিকের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত পাকিস্তান দলের ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ান। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মাঠে নামার আগে ছিলেন দুইদিন হাসপাতালের আইসিইউতে। তবে দেশের টানে সেখান থেকে হাজির বিশ্বকাপের সেমিতে খেলেছিলেন ৬৭ রানের লড়াকু ইনিংস।
দুই ফাইনালিস্টের অদ্ভুদ মিলঃ মিল অমিলের খেলা যদি হয় ক্রিকেট তবে সেই মিল-অমিলকে অদ্ভুদভাবে বিশ্বমঞ্চে হাজির করেছিলো দুই ফাইনালিস্ট নিউজিল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়া। দুই দলই ফাইনালের টিকিট পেতে হারিয়েছে বিশ্বকাপে অপর গ্রুপের চ্যাম্পিয়নদের। সঙ্গে দুই দলই বিপক্ষ দলের উইকেট নিয়েছিলেন সমান চারটি করে। জয়টা এনেছিলেন একই ব্যবধানে ৫ উইকেট এবং এক ওভার হাতে রেখে।
অধিনায়ক হিসেবে সর্বোচ্চঃ চলতি বিশ্বকাপের ফাইনালে অধিনায়ক হিসেবে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়েছেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। ২০০৯ সালের ফাইনালে শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক কুমার সাঙ্গাকারার ৬৪ রানের রেকর্ড ভেঙে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অধিনায়ক হিসেবে ৮৫ রান করেছিলেন কেন উইলিয়ামসন।
৩১ বলে অর্ধশতকঃ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে দ্রুততম অর্ধশতক হাঁকানোর রেকর্ড গড়েছেন অস্ট্রেলিয়ান টপ অর্ডার মিচেল মার্শ। পিছনে ফেলে দিয়েছেন ঘন্টা দুয়েক আগে নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের গড়া ৩২ বলের অর্ধশতককে
ওয়ার্নারের ২৮৯ রান- বিশ্বকাপের মতো বিশ্বমঞ্চে ২৮৯ রান নিয়ে কোন অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটার হিসেবে এক আসরে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়লেন ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার। এর আগে ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরে ম্যাথু হেইডেন করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার হয়ে এক আসরে সর্বোচ্চ ২৬৫ রান।