মেহেদী মিরাজ অসম্ভবকে সম্ভব করে শেষ পর্যন্ত ভারতকে হারিয়ে মাঠ ছাড়েন। বাংলাদেশের ৯ জন ব্যাটার আউট হতেই বাংলাদেশের জয়ের আশা শেষ হয়ে যায়। উইকেটে মেহেদী হাসান মিরাজ আর মুস্তাফিজ ছিলেন শেষ ব্যাটার। মেহেদী হাসান মিরাজ দলকে জেতানোর মিশনে নামেন। মুস্তাফিজকে সাথে নিয়ে জুটি গড়ে তোলেন মিরাজ। কোনো ধরণের সিঙ্গেল রান না নিয়ে শুধু মাত্র বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ম্যাচ জেতানোর চেষ্টা করেন। স্ট্রাইকে থেকে দুর্দান্ত খেলছিলেন মিরাজ। শেষ পর্যন্ত ভারতকে একাই হারিয়ে দেন মিরাজ। ৩৯ বলে ৩৮ রান করে জয়ের নায়ক মিরাজ।
শুরুতে বাংলাদেশ বনাম ভারতের প্রথম ওডিআই ম্যাচে মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পরে ভারত। শুরুতেই বাংলাদেশ টসে জিতে ফিল্ডিং এর সিদ্ধান্ত নেয়। ভারতের হয়ে ওপেনিং এ ব্যাটিং এ নামেন রোহিত শর্মা ও শেখর ধাওয়ান। শুরুতেই ধরে খেলছিলেন ভারতের দুই ওপেনার। কিন্তু একপর্যায়ে ৫.২ ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে ১৭ বলে ৭ রান করে ফিরে যান শেখর ধাওয়ান। ১০.২ ওভারের সময় সাকিব আল হাসানের স্পিন ভেল্কিতে পরাস্ত হন ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা। ৩১ বল খেলে ২৭ রান করে ফিরে যান তিনি।
এর পরে উইকেটে এসে টিকতে পারেননি ভারতের হার্ড হিটার বিরাট কোহলি। সাকিব আল হাসানের ওভারেই লিটনের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন তিনি। ১৫ বল খেলে মাত্র ৯ রান করেন কোহলি। এর পরেই শ্রেয়াস আইয়ার আর কে এল রাহুল উইকেটে টিকে থাকার চেষ্টা করেন। কিন্তু এবাদত হোসেনের দুর্দান্ত বোলিং তোপে এজ হয়ে উইকেট কিপার মুশিফিকের তালুবন্দি হন শ্রেয়াস আইয়ার। ভারত নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাচ্ছিলো।
এর পরে বেশ কিছুক্ষন ওয়াশিংটন সুন্দর এবং কে এল রাহুল ধরে খেলার চেষ্টা করছিলেন কিন্তু বেশিক্ষন টিকতে পারেননি তারা। আবারো সেই সাকিব আল হাসানের বলেই সুইপ করতে গিয়ে ৪৩ বলে ১৯ রান করে এবাদত হোসেনের হাতে ক্যাচ তুলে দেন সুন্দর। অনেকটা টেস্ট স্টাইলে ব্যাটিং করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তিনি।
পরের ওভারেই বোলিং এ আনা হয় এবাদত হোসেনকে। তিনি বোলিং এ এসেই শাহবাজ আহমেদের উইকেট তুলে নেন। শাহবাজ সহজ ক্যাচ তুলে দেন সাকিব আল হাসানের হাতে।নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাচ্ছিল ভারত।
এবাদত-সাকিব পরপর ওভার করতে থাকেন। পরের ওভারে সাকিব আবারো এসে বোল্ড করেন শার্দুল ঠাকুরকে। একই ওভারে সাকিব আবারো এলবিডাব্লিউ এর ফাঁদে ফেলেন দীপক চাহারকে।ভারতের এমন ব্যাটিং বিপর্যয় দেখে রীতিমত অবাক হয়ে যান ভারতের দর্শকেরা।
ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ রান করেন কে এল রাহুল। এই ব্যাটার তার অর্ধশত রান তুলে নেন প্রথম ওডিআইতে। শেষমেশ ৭০ বলে ৭৩ রান করে এবাদতের বলে বিজয়ের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরে যান কে এল রাহুল।
সবশেষ এবাদত সিরাজের উইকেটটি তুলে নিয়ে ১৮৬ রানেই শেষ করে দেয় বাংলাদেশকে। ম্যাচে সবচাইতে সফলতম বোলিং করেছেন সাকিব আল হাসান এই ম্যাচে তিনি ভারতের ৫টি উইকেট তুলে নেন। সাকিবের পরেই অবস্থান এবাদত হোসেনের। তিনিও ৪টি উইকেট তুলে নেন বাংলাদেশের হয়ে।
১৮৭ রানের লক্ষে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের হয়ে ওপেনিংয়ে ব্যাটিং করতে নামেন নাজমুল হোসাইন শান্ত আর লিটন দাস। শুরুতেই শান্ত চাহারের প্রথম বলেই রোহিত শর্মার হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান।
এর পরেই ব্যাটিংয়ে নামেন বিজয়। নবম ওভার পর্যন্ত দুজন ধরে খেললেও স্কোরবোর্ডে তেমন রান ওঠেনি। এনামুল হক বিজয় ২৯ বলে ১৪ রান করে সিরাজের বলে ওয়াশিংটন সুন্দরের হাতে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান।
বিজয় আউট হতেই উইকেটে আসেন সাকিব আল হাসান। লিটন সাকিব জুটি বেঁধে দীর্ঘক্ষণ উইকেটে টিকে থাকেন। ৬৩ বলে ৪১ রান করে ওয়াশিংটন সুন্দরের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন লিটন। লিটনের পরেই ব্যাটিংয়ে আসেন মুশফিকুর রাহিম।
সাকিব-মুশফিক এক সাথে অবশ্য বেশিক্ষন খেলতে পারেন নি। ৩৮ বলে ২৯ রান করে সেই ওয়াশিংটন সুন্দরের বলেই বিরাট কোহলির ক্যাচ হয়ে ফিরে যান সাকিব।
এর পর মুশফিক আর মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ দীর্ঘক্ষণ উইকেট ধরে রাখনে কিন্তু আশানুরূপ রান তুলতে পারছিলেন না। মুশফিক-মাহমুদুল্লাহ পরপর ফিরে যান। মুশফিক ১৮ আর মাহমুদুল্লাহ ১৪ রান করে ফেরেন। এই দুইজনের পরে আফিফ এবং মেহেদী হাসান মিরাজ ব্যাটিং করতে আসেন।
আফিফ ১২ বল খেলে মাত্র ৬ রান করেন। মুস্তাফিজকে সাথে নিয়ে জুটি গড়ে তোলেন মিরাজ। কোনো ধরণের সিঙ্গেল রান না নিয়ে শুধু মাত্র বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ম্যাচ জেতানোর চেষ্টা করেন। স্ট্রাইকে থেকে দুর্দান্ত খেলছিলেন মিরাজ। শেষ পর্যন্ত ভারতকে একাই হারিয়ে দেন মিরাজ। ৩৯ বলে ৩৮ রান করে জয়ের নায়ক মিরাজ।